ফ্যান কবিতা - প্রেমেন্দ্র মিত্র ||কবিতার জগৎ

 নগরের পথে পথে দেখেছ অদ্ভুত এক জীব  

ঠিক মানুষের মতো  

কিংবা ঠিক নয়,  

যেন তার ব্যঙ্গ-চিত্র বিদ্রূপ-বিকৃত!  

তবু তারা নড়ে চড়ে কথা বলে, আর  

জঞ্জালের মত জমে রাস্তায়-রাস্তায়।  

উচ্ছিষ্টের আস্তাকূড়ে ব’সে ব’সে ধোঁকে  

আর ফ্যান চায়।  

রক্ত নয়, মাংস নয়,  

নয় কোন পাথরের মতো ঠান্ডা সবুজ কলিজা।  

মানুষের সত্ ভাই চায় সুধু ফ্যান;  

তবু যেন সভ্যতার ভাঙেনাকো ধ্যান!  

একদিন এরা বুঝি চষেছিল মাটি  

তারপর ভুলে গেছে পরিপাটি  

কত-ধানে হয় কত চাল;  

ভুলে গেছে লাঙলের হাল  

কাঁধে তুলে নেওয়া যায়।  

কোনোদিন নিয়েছিল কেউ,  

জানেনাকো আছে এক সমুদ্রের ঢেউ  

পাহাড়-টলানো।  

অন্ন ছেঁকে তুলে নিয়ে,  

ক্ষুধাশীর্ণ মুখে যেই ঢেলে দিই ফ্যান  

মনে হয় সাধি এক পৈশাচিক নিষ্ঠুর কল্যাণ;  

তার চেয়ে রাখি যদি ফেলে,  

পচে পচে আপন বিকারে  

এই অন্ন হবে না কি মৃত্যুলোভাতুরা  

অগ্নি-জ্বালাময় তীব্র সুরা!  

রাজপথে এই সব কচি কচি শিশুর কঙ্কাল–মাতৃস্তন্যহীন,  

দধীচির হাড় ছিলো এর চেয়ে আরো কি কঠিন?

Comments

Popular posts from this blog

আমার বাড়ি কবিতা - জসীম উদ্দীন | কবিতার জগৎ